উপজেলা পরিষদ  নির্বাচন মার্চেই 

উপজেলা পরিষদ  নির্বাচন মার্চেই 

সিলেট বিভাগের ৪০টিসহ দেশের উপজেলা পরিষদ সমূহের নির্বাচন নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী মার্চে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণের টার্গেটও ইতোমধ্যে ঠিক করা হয়েছে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বসে নেই প্রার্থীরাও। তফসিল ঘোষণার আগেই অনেক প্রার্থী মাঠে নেমে পড়েছেন।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, চলতি জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। 

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ আগামী মার্চে উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি জানান, রোজার আগেই উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। দেশে পরিষদ আছে ৪৯৫টি। এসব উপজেলায় সাধারণত একসাথে নির্বাচন হয় না। কয়েক ধাপে করতে হয়। নির্বাচন কমিশন সব বিষয় বিবেচনা করে নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। দেশে রোজার মধ্যে নির্বাচন হওয়ার নজির কম রয়েছে। কমিশন অনুমোদন দিলে প্রথম ধাপের নির্বাচন রোজার আগে এবং বাকিগুলো রোজার পরে হতে পারে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয়। সে হিসেবে সব উপজেলাই নির্বাচনের যোগ্য হয়েছে।

সিলেট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান সিলেটের ডাককে বলেন, সিলেট জেলার সকল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্যে উপযুক্ত। নির্বাচন কমিশনকে ইতোমধ্যে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এখন নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। আমাদের কাজ কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করা।

সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার মধ্যে এবারই প্রথম বারের মতো নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ইতোপূর্বে কখনো অনুষ্ঠিত হয়নি। মধ্যনগরসহ জেলার ১২ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে তারা প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।

এদিকে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। মার্চের মাঝামাঝি শুরু হচ্ছে রোজা। নির্বাচন কমিশন রোজার আগেই প্রথম ধাপের নির্বাচন শুরু করার কথা ভাবছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ ও সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ মাঠে নেমে পড়েছেন। বসে নেই তাদের কর্মী সমর্থকরাও। সরগরম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও। কোন কোন এলাকায়  গ্রাম থেকে পাড়া মহল্লা পর্যন্ত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ছুটে যাচ্ছেন। দলীয় প্রতীক পেতে কেউ কেউ নেতাদের দ্বারে দ্বারে ধর্না দিতে শুরু করেছেন। অবশ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি ও তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। 

জানা গেছে, সিলেট বিভাগের চার জেলায় মোট উপজেলার সংখ্যা ৪১ টি। নবগঠিত মধ্যনগর ছাড়া বাকি ৪০টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ৪০টির মধ্যে শায়েস্তাগঞ্জ, ওসমানীনগর, দক্ষিণ সুরমা আর শান্তিগঞ্জ উপজেলা ছাড়া বাকিগুলো অনেক পুরনো উপজেলা। এসকল উপজেলায় দেশে উপজেলা পদ্ধতি চালুর পর থেকেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। 

সিলেট বিভাগের  উপজেলা সমূহ 

সিলেট জেলার উপজেলা সমূহ হচ্ছে- সিলেট সদর, বিশ্বনাথ, ওসমানীনগর, দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা।

সুনামগঞ্জ জেলার উপজেলা সমূহ হচ্ছে- সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দিরাই, শাল্লা, জগন্নাথপুর, শান্তিগঞ্জ, ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ ও মধ্যনগর উপজেলা।

মৌলভীবাজার জেলার উপজেলা সমূহ হচ্ছে- মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর, কুলাউড়া, শ্রীমঙ্গল, বড়লেখা, কমলগঞ্জ ও জুড়ী উপজেলা।

হবিগঞ্জ জেলার উপজেলা সমূহ হচ্ছে- হবিগঞ্জ সদর, নবীগঞ্জ, বাহুবল, আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, লাখাই, চুনারুঘাট, মাধবপুর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা।